✅ঠাকুরগাঁও জেলার  পরিচিতি:


 জানা গেছে ঠাকুর পরিবার বা ব্রাহ্মণদের সংখ্যাধিক্যের জন্য ঠাকুরগাঁও নাম আসে। ১৮০০ সালে ঠাকুরগাঁও থানা স্থাপিত হয় এবং ১৮৬০ সালে বালিয়াডাঙ্গি, পীরগঞ্জ, রানিশংকৈল হরিপুর ও আটোয়ারী নিয়ে সাব ডিভিশন ঠাকুরগাঁও এর যাত্রা। পরবর্তীতে জলপাইগুড়ি ও কোচবিহার জেলার পঞ্চগড় বোদা দেবিগঞ্জ তেঁতুলিয়া, পঞ্চগড়, বোদা, দেবীগঞ্জ তেঁতুলিয়া এই চারটি থানা ঠাকুরগাঁও সাব-ডিভিশনের এর সাথে যুক্ত হয়।

১৯৮৪ সালে এক ফেব্রুয়ারি জেলা  হিসেবে যাত্রা শুরু করে। ঠাকুরগাঁও_জেলা রংপুর বিভাগে অন্তর্গত। এই জেলা বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকায় অবস্থিত। এই জেলার পূর্বে পঞ্চগড়, দক্ষিণে দিনাজপুর, উত্তরে ও পশ্চিমে রয়েছে ভারতের সীমানা।  সীমানার ওই পারে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ।  ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিক ভাবে এই জেলা অনেক শক্তিশালী। 

অবস্থান: এই জেলা ২৫.৪০° হতে ২৬.১০° উত্তর অক্ষাংশের এবং ৮৮.৩৬° হতে ৮৮.৩৬° পূর্ব দ্রাঘিমায় অবস্থিত। যা সমুদ্র পৃষ্ট হতে ৫২ মিটার উচ্চতায়। ভারতের সাথে জেলার সীমান্ত ৮৫ কি.মি। এ জেলার জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ,  বার্ষিক গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ ৩৩.৫০° সে. এবং সর্বনিম্ন ১০.৫০° সে.।  গড় বৃষ্টিপাত ২৫৩৬ মি.মি।


 ঠাকুরগাঁও জেলায়  আয়তন ও জনসংখ্যা:

এই জেলার মোট আয়তন প্রায় ১৮০৯.৫২ বর্গকিলোমিটার এবং জনসংখ্যা  প্রায় আনুমানিক১৫.৩৩ লক্ষ। এর মধ্যে পুরুষ ৭,৬৮,৮০০ জন,  নারী ৭,৬৪,৭০৮ জন এবং হিজড়ার সংখ্যা ৬৭ জন। জনসংখ্যার ঘনত্ব প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ৮৬১ জন। এ জেলার গ্রামের জনসংখ্যা ১২,৪৮,৪১৯ জন এবং শহুরে  জনসংখ্যা ২,৮৪,৮৫৭ জন। 
                                                                                          -( জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)


👪জনগোষ্ঠী : 

ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মোট জনসংখ্যা ১৫,৫৫১জন।  মুন্ডা, সাঁওতাল, কোচ, রাজবংশী, মাহাতো, কুমার, হাড়ি, ভুঁইয়া, পলিয়া, হো , গাংঘু, বোডো, মালো, ওড়াওঁ ইত্যাদি নৃগোষ্ঠী এখানে বসবাস করে। এ জেলায় বিভিন্ন ধর্মের লোক বসবাস করলেও 

ইসলাম ধর্মের ৭৭.০২%
হিন্দু ধর্মের ২২.১১%
খ্রিষ্টান ধর্মের. ৬৩%
বৌদ্ধ ধর্মের ০.০১%
এবং 
অন্যান্য ০.০১% 

ঠাকুরগাঁও জেলার মৌজার সংখ্যা ৬৪৭ টি। ইউনিয়ন সংখ্যা -৫৪ টি। পৌরসভা সংখ্যা - ৩ টি। উপজেলা সংখ্যা - ৫ টি।

উপজেলা গুলো হলো:
ঠাকুরগাঁও সদর,
বালিয়াডাঙ্গি, 
পীরগঞ্জ, 
রানিশংকৈল,
হরিপুর। 

-( জনশুমারি ও গৃহগণনা ২০২২)


🌊নদ-নদী: 

ঢেপা, ভুল্লী, টাঙ্গন, নাগর, সেনুয়া, কুলিক, শুক, তীরনই।



🍀দর্শনীয় স্থান ও পুরাকৃতি: 

রানীশংকৈল জমিদার বাড়ি, হরিপর জমিদারবাড়ি, রামরাই দিঘি, নাথ মন্দির, জামালপুর জামে মসজিদ, প্রাচীন রাজভিটা, জগদল রাজবাড়ী, প্রাচীন জনপদ নেকমরদ, মহালবাড়ি মসজিদ, শালবাড়ি মসজিদ ও ইমামবাড়া, বনগাঁও শাহী মসজিদ, ফতেহপুর মসজিদ, মেদনী সাগর জামে মসজিদ, খোলাহাট মন্দির, টাঙ্গন ব্যারেজ, রাজা টঙ্গনাথের রাজবাড়ি, বালিয়াডাঙ্গি সূর্যপুরি আমগাছ ইত্যাদি।


🌾 কৃষি ও অর্থনীতি:

মূল অর্থনৈতিক উৎস: কৃষিকাজ।

কৃষক পরিবার সংখ্যা - ৩,৩৪,৩৭০, মোট আবাদী জমির পরিমান ১,১৫,৬৯৩ হে:, ফল বাগান- ৪,৪৮০৬ হে: এক ফসলী জমি ২৮৮০ হেক্টর, দো ফসলী জমি- ৬২,১৯০ হেক্টর, তিন ফসলী জমি- ৮২,৩৭৩ হেক্টর, তিনের অধিক- ৪২৫০ হেক্টর। উচু জমি- ৯০৪০৮ হেক্টর। মাঝারি উচু- ৪৭২৩২ হে: 

প্রধান ফসল: ধান, গম, ভুট্টা, আখ, আলু, সরিষা। ঠাকুরগাঁওয়ের আলু ও আখ সারা দেশে বিখ্যাত। কোল্ড স্টোরেজে আলু সংরক্ষণ এবং রপ্তানি হয়।ঠাকুরগাঁও চিনিকল এক সময়ের গুরুত্বপূর্ণ শিল্পপ্রতিষ্ঠান।


                                                                         🌲বন:

থুমনিয়া শালবাগান, আয়তন- ৫০৩.৬২ একর, শাগুনি শালবাগান, আয়তন- ১৫২.৩২ একর।



🏫 শিক্ষা ও প্রতিষ্ঠান:

শিক্ষা প্রতিষ্ঠান: স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট।
শিক্ষার হার উন্নত হচ্ছে ধীরে ধীরে।
শহরে অনেক প্রাইভেট ও পাবলিক স্কুল গড়ে উঠেছে।


💉স্বাস্থ্য:

সদর হাসপাতাল- ১টি,  নার্সিং ট্রেনিং সেন্টার- ১টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিবকল্পনা কেন্দ্র- ১৩টি, , মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র- ১টি, বক্ষ ব্যাধি ক্লিনিক- ১টি, কমিউনিটি ক্লিনিক- ১৩৭টি, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র- ৪৬টি, সেটার ক্লিনিক- ৬৩টি।


🐐পশু সম্পদ:

ঠাকুরগাঁও জেলায় বতমানে একটি জেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর,  একটি সরকারি হাঁসমুরগির খামার,  একটি জেলা কৃত্রিম প্রজনন কেন্দ্র, ১০টি সরকারি কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট, ১১টি প্রাণিসম্পদ কল্যাণ কেন্দ্র, ৫৫টি স্বেচ্ছাসেবী কৃত্রিম প্রজনন পয়েন্ট রয়েছে। জেলায় ৬৪৪৩৯৫ টি গরু, ১৬১০০০ টি গাভী, ৫৪৩০০০টি ছাগল, ১২৬৭৭ টি মহিষ, ৪৭০০টি ভেড়া, ৩১১৭৬০৩ টি মোরগ-মুরগি, ১৯৮১৮৬ টি হাঁস, ৫৬০০০ টি কোয়েল রয়েছে। এছাড়া এই জেলায় ৫০৮টি গাভী,  ০২টি ভেড়া,৪৬টি ছাগল,২০৯টি ব্রয়লার মুরগি, ১২১টি লেয়ার মুরগি,  ৩২টি হাঁসের ও ১টি কোয়েল এর রেজিষ্টার্ড খামার রয়েছে এবং ১৩টি লাইসেন্স প্রাপ্ত ফিড এর দোকান ও ৩টি ফিড মিল রয়েছে।


🏀ক্রীড়াঙ্গন:

ক্লাবসমূহ: আগমনী স্পোর্টিং ক্লাব, সাম্য ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী,  টাউন ক্লাব,  বাবু স্মৃতি সংসদ, সরকারপাড়া আজাদ ক্লাব, আর্টগ্যালারী একাদশ, আশ্রমপাড়া তরুণ সংঘ, রুশ স্মৃতি সংসদ ইত্যাদি।


🎉সামাজিক সংগঠন:

ক্লাব ১৭২টি, নারী সংগঠন ১৯৮টি
 সামাজিক উন্নয়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত সংস্থা: সমাজসেবা অধিদপ্তর, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর, বালক ও বালিকা এতিমখানা।


👇ম্যাপ:












Post a Comment

Previous Post Next Post

আরো পড়ুনঃ